Wednesday, 8 August 2018

কবি "স্বপন গায়েন " এর এক গুছ কবিতা



কবিতা – রবীন্দ্রনাথ
- স্বপন গায়েন          

রবি মানে রবীন্দ্রনাথ রবি জোড়াসাঁকো
রবি মানে ঠাকুরবাড়ি রবির ছবি আঁকো।

রবি মানে সূর্যকিরণ রবিই আকাশ গ্রহ তারা
রবি মানে নোবেল জয় রবিই সেরার সেরা।

রবি মানে গল্প নাটক রবির উপন্যাস
রবি মানে গানের ডালি রবিই বারমাস।

রবি মানে সাহিত্য সৃষ্টি রবি মানে আলো
রবি মানে বাঁচার আশা রবির সৃষ্টি ভালো।

রবি মানে বাংলা সাহিত্য রবি বিশ্ব কবি
রবি মানে অমর কবি রবিই বিশ্ব ছবি

রবি মানে জাতীয় সংগীত রবিই বাংলা ভাষা
রবি মানে হৃদয় জুড়ে রবির গর্বে ভাসা।

রবি মানে পঁচিশে বৈশাখ রবিই বাইশে শ্রাবণ
রবি মানে তারিখ নয় রবিকে করবো স্মরণ।

        *******


কবিতা - বিধাতার দান

চাঁদের বুকে কলঙ্ক দাগ খুঁজে লাভ কী
বালুচরে পূর্ণিমা চাঁদের আলো এক মায়াবী খেলা
তখন মুগ্ধ চোখে চাঁদকে দেখা ছাড়া উপায় কী
চাঁদের কলঙ্কের কথা মনেও আসে না


নদীর বুক শুকিয়ে গেছে গ্রীষ্মের দাবদাহে
হাঁটুজল ভেঙে নদী পেরিয়ে যায় জনস্রোত
আবার ভরা বর্ষায় সেই নদী দুকূল ছাপিয়ে
ভাসিয়ে নিয়ে যায় জনপদ কিংবা গ্রামের পর গ্রাম


রূপসী নাইবা হলে তুমি, কালো রূপে এতো ঐশ্বয্য
অনেক সুন্দরী মেয়ের নেই, তোমার আগুনে তুচ্ছ
পুড়ে যায় পুরুষ শরীর তোমার দাবদাহে ...
তুমি যতই কালো হও যে বিধাতার দান।।


           *******

কবিতা - সাঁঝের পাখি

চোখের তারায়               মনের কথা
               নদীর কথা বুকে
ওষ্ঠ ভেজায়                 বৃষ্টি দুপুর
            নূপুর বাজে সুখে


স্বপ্ন উড়ান              হৃদয় জুড়ে
          আকাশ খোঁজে মন
ভোরের শিশির          সুর ভুলেছে
               নীরব আগমন


স্নিগ্ধ আলো               মুগ্ধ আবেশ
          উদাস সাঁঝের পাখি
হাতটা এসে              দাও বাড়িয়ে
           একটা পরাই রাখি


রামধনু রঙ               শরীর জুড়ে
          ওষ্ঠে গোধূলি বেলা
মেঘ পাখিদের            লাজুক ডানা
            মত্ত সুখের খেলা।।


             ********


কবিতা - প্রত্যাশা

কুমারী শরীরে প্রত্যাশা অনেক বেশী ...
আধখানা চাঁদের কলঙ্ক অত বোঝা যায় না
যখন চাঁদ পূর্ণবতী হয় তখন কলঙ্ক ধরা পড়ে
কুমারী শরীরের উদ্যাম উষ্ণতা গিলে খায় শরীর
কলঙ্কের কথা হারিয়ে যায় অবাধ্য অবহেলায়


নষ্ট অন্ধকারে জোনাকির মৃদুমন্দ আলোয়
শরীরী উপত্যকায় ধ্বংসের করাল গ্রাস ...
অশান্ত ঘূর্ণি ঝড়ের মতো ছড়িয়ে পড়ে শাখাপ্রশাখায়
মৌন স্বপ্নগুলো গিলে খায় চরম যন্ত্রণায় -
শিউলি ফুল নীরবে ঝরে যায় ভোরের আগেই


মাতাল শরীর শুনতে পায় জলপ্রপাতের শব্দ
যৌবনের অহংকার ধুয়ে যায় রাতের অন্ধকারে
জানালার ফাঁক দিয়ে আধখানা চাঁদ দেখা যায়
ক্লান্ত অবসন্ন শরীর ডুবে যায় গভীর ঘুমে
মৌন স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায় স্মৃতির মায়াজালে।।


              ******
বিতা -  পান্ডুলিপি

বুকের জলপথে কোনো ফেরারি নৌকো নেই
রাতের ভাষা হারিয়ে যায় দিগন্তের মায়াজালে
মুগ্ধ বিস্ময়ে জ্যোৎস্নার খেয়ালী আলো
ছুঁয়ে যায় মনের গোপন অন্ধকার।


উজান স্রোতে হারিয়ে যাবার আনন্দই আলাদা
চাঁদের আলোয় নতুন বর্ণমালার পান্ডুলিপি খুঁজি
ঝিনুক কুড়নোর মত অস্পট অক্ষর বালুচরে জুড়ে
ভালোবাসার স্পর্শ ছুঁয়ে যায় বুকের জলপথ।


অজস্র মুক্তো লুকিয়ে তোমার শরীরী গুহায়
ডুবুরী হয়ে নেমে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়াই
নদীর চরে শুয়ে আছে লক্ষ পুরুষের লাশ
মুক্তোর লোভে ডুবছে শরীর, ভাঙছে খেলাঘর।।


          ********

কবিতা - ভালোবাসার নৌকা

চাঁদের আলোয় চরাচর মাখামাখি
পথভোলা নদী স্রোত অন্তহীন খেলা করে
উতলা বাতাসে ঢেউ আছড়ে পড়ে কূলে
ভাঙনের কথা লেখা হয় মন উপকূলে


শতাব্দী পেরিয়ে যায় ছলনার হাত ধরে
নদী জানে তার গোপন ক্ষয় ...
জলদস্যুরা ভুলে গেছে নদীর পাগলামি
পথ চেয়ে বসে আছে বন্য জ্যোৎস্না


ভৌগলিক সীমারেখা মুছে দেয় নদীর স্রোত
ভ্রাম্যমাণ চাঁদ হাতছানি দেয় মনের জানালায়
গল্পের শেষ পাতায় লেখা হয় মিলনের গান
স্নিগ্ধ নদী জল ছলাৎ ছলাৎ শব্দে প্রবাহমান


খেয়াঘাটে দাঁড়িয়ে অজস্র নারী পুরুষ -
দীর্ঘ প্রতীক্ষায় কূলে ভেড়ে ভালোবাসার নৌকা
ভোরের প্রথম আলোয় ভেসে যায় যৌবন
তরঙ্গহীন নদী জল বয়ে চলে আপন খেয়ালে।।


            **********

কবিতা - নদীর চোখে ঘুম


আগ্রাসী নদী               ঘুমিয়ে পড়ে
           শান্ত শীতের বেলা
মেঘ গর্জন                  তুফান বৃষ্টি
           সাঙ্গ এখন খেলা।


লাজুক দুপুর               হিমেল হাওয়া
          মুগ্ধ চোখের তারা
হৃদয়ের গান               করে কলতান
            স্বচ্ছ নদীর ধারা।


বুকের পাঁজরে               গোপন রাত্রি
            ফিসফিস কথা কয়
বন্ধ দুয়ার                   উথাল পাথাল
             ওষ্ঠে আগুন বয়।


ভোরের আলো                শিউলি সুবাস
               নদীর চোখে ঘুম
জোনাকি আলো              বিলীন হয়েছে
               শিউলি কুড়নো ধুম।


কিশোরীর শাড়ি                অগোছালো বুক
                চাঁদের মোহন হাসি
মুগ্ধ আকাশ                   নেই অবকাশ
            নদী জল ভালোবাসি।।


                  *****

কবিতা - অর্ধেক অভিমান 


রোদ্দুরের তেজ শুষে নিচ্ছে উত্তুরে হাওয়া
শিউলি ফুলের শুভ্রতা ছুঁয়ে যায় উদাসী মন
পেঁজা তুলো মেঘ কাশের হাওয়ায় ভাসে।


কাগজের নৌকায় জমিয়েছিলাম স্বপ্নের ইমারত
শরৎ মেঘে ভাসিয়েছি ভালোবাসার ভেলা
বুকের ভেতর অগোছালো নদী পথভোলা।


অর্ধেক পৃথিবী ডুবে গেছে আঁধারে
ভালোবাসা ভাগ হয়েছে অর্ধেক ...
চোখের কাজল শুকিয়ে হয়েছে আরও কালো।


অর্ধেক অভিমানে ব্যবধান বাড়ায় জীবনে
নগ্ন রাত্তির জানে ভালোবাসার গন্ধ
দিগন্ত জুড়ে শুধু কালো মেঘ অবেলায়।।


          *******

কবিতা - ছেঁড়া মানচিত্র

 

ছেঁড়া মানচিত্র জুড়ে তোমার 
অগোছালো অভিমানী মুখ 
গোপন ক্ষয় ছিঁড়ে 
অবিরাম রক্তের প্রবাহ। 

খরস্রোতা নদীর মতো বয়ে চলে 
অনন্তকাল ধরে ... 
নারীর শরীরে এতো রক্ত 
আসে কোথা থেকে? 
শরীরের লজ্জাবস্ত্র দিয়েও 
ঢাকা যায না স্রোত। 

ডুবো জাহাজের মতো 
তবুও বেঁচে থাকে নারী। 
তার ভালোবাসার মাস্তুল ধরে 
বেঁচে গোটা পরিবার। 

একটা সময় রক্তের নদীতে 
পলি জমতে জমতে ... 
সম্পর্কের টানে সমস্ত বাধাকে 
তুচ্ছ করে এগিয়ে চলে - 
কেবলমাত্র ডুবো জাহাজকে 
ভাসিয়ে রাখতে, মন দরিয়ায়।। 

   *******

১০
কবিতা - নীরব অহংকার

কতোটা সোহাগ দিলে 
তুমি উপনদী হবে?
 
কতোটা ... ?
 

কতোটা জ্যোৎস্না বুকের নীলিমায় পড়লে
 
তুমি সমুদ্র দেখাবে?
 
কতোটা ... ?
 

কতোটা পথ পেরিয়ে এলে
 
তুমি হাতটা আমার ধরবে?
 
কতোটা ... ?
 

কতোটা রাত জাগলে
 
তুমি আকাশ হবে?
 
কতোটা ... ?
 

কতোটা তারা গুনলে
 
তুমি শুকতারা হবে?
 
কতোটা ... ?
 

হাজার প্রশ্ন নীরব অহংকার
 
তুমি শুধুই মায়াবী হাসলে
 
অবুঝ পুরুষ অনন্ত জিজ্ঞাসা!
 

        ******

ঠিকানা
নাম – স্বপন গায়েন
গ্রাম – রঘুনাথপুর
পোঃ – বীরেশ্বরপুর

 



No comments:

Post a Comment