Sunday, 12 August 2018

১ম সংখ্যা

            [১ম ব্লগ সংখ্যা ]

সম্পাদকীয়
~~~~~~~~
কবিতা কী নেশা? আমার মতে - হ্যাঁ। অবশ্যই নেশা। এই পৃথিবীতে যখন আমরা প্রায় প্রত্যেকেই লাভ ছাড়া কোনো কাজ করতেই চাই না, সেখানে প্রায় কোনো অর্থনৈতিক প্রাপ্তি না থাকা সত্ত্বেও কবিতা লেখা হয়, কবিতা আবৃত্তি করা হয়। এবং নির্দ্বিধায় একথা বলাই যায় যে কবিরা শুধু অবসর সময় নয়, কাজের সময়, ব্যক্তিগত সময়েও কবিতা সৃষ্টি করে চলেছেন। ফেসবুক তথা অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমই এর প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট বলে মনে করি। প্রাণের আবেগ, মনের তাগিদেই সৃষ্টি - কবিতা। এও এক নেশা।

    ---------------------------------------
              সূচীপত্র কবির নামে
                  ---------------------------------------
                 
১.)নৃপেন্দ্রনাথ মহন্ত

২.)রাণা চ্যাটার্জী

৩.)নাসির ওয়াদেন

৪.)সুনন্দ মন্ডল

৫.)বিকাশ দাস

৬.)অমিতাভ দাস

৭.)নাজিমা পারভীন

৮.)শরদিন্দু চক্রবর্তী

৯.)শুভ্রা

১০.)আমিরুল ইসলাম

১১.) শুভদীপ পাপলু

১২.)জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি

১৩.)কবি মিশ

১৪.)কাঞ্চন বর্মন

১৫.)রীতা রায়।      

১৬.)রূপা রবিদাস

১৭.)বিশ্বজিৎ প্রামাণিক

১৮.)বনানী চক্রবর্ত্তী

১৯.)মৌসুমী ভৌমিক

২০.) ডট.পেন



                   --------------------
                লেখার লেখায় এসো
       ==========================


১.)
খাদে পড়ে আছি
নৃপেন্দ্রনাথ মহন্ত
***************
মহাজনের ডাকে শুভবুদ্ধির চাষ করে
পড়ে গেছি খাদে
এখানে টিক-টিক সময়ের নেই কোনো দাম
এখানে তারা ফোটে না,চাঁদ ওঠে না
নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। এখানে অবিরাম
জেগে থাকা।নেই কোনো ঘুম।
এখানে ভোর নেই--অনন্ত রাত্রির নিজঝুম।

এখানে মেঘ নেই,মেঘেমেঘে ঘর্ষণের বাসনা নেই,বিজলির চমকও নেই তাই।
শুধু কিছু জোনাকির  অতি  ক্ষুদ্র  আলো
জ্বলে-নেভে।ফলত অন্ধকার অধিক জোরালো।

আজ বাহাত্তর বছর ধরে এক ঠাঁই
আমরা জেগে আছি পুনর্নবীকৃত অন্ধকারে।

বাহাত্তর বছর ধরে ঘুমচোখে জেগে বসে আছি

বাহাত্তর বছর ধরে ঘুমঘোরে
সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন দেখতে দেখতে
খাদে পড়ে গেছি।

বাহাত্তর বছর পরে আমরা এখনো
সেই খাদে পড়ে আছি।
               ------------
২.)
" মৃত্যু "
    রাণা চ্যাটার্জী

মৃত্যুর রঙ কে দেখেছো? গাঢ় নীল না সবুজ !
মৃত্যু ঘন্টা বাজলে পরে,নিশ্চুপ ,সব অবুজ ।
দিকে দিকে ঐ লেলিহান শিখা,মৃত্যু পরোয়ানা,
টিভির পর্দা,পেপারে অকালে মৃত্যুর মুন্সিয়া। জীবন ও মৃত্যু ব্ন্ধু প্রগাঢ়,হিম
শীতল গভীরতা ,
মৃত্যু মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ ,স্পন্দিত নীরবতা ।
কিছু মৃত্যু তবু রোখা যায়, এলেও মৃত্যু থাবা ,
নারীশিক্ষা,সচেতনতা,জীবন সহজ ভাবে ভাবা
কতো সহজে মৃত্যুর গ্রাস,পুরুষ তন্ত্রের ধ্বজা ,
মাতৃশক্তি হয়েও নারী,বয়ে চলে পাপ বোঝা!

কোথাও মৃত্যু সরল মায়ের,জন্ম দিয়েছে কন্যা ,
মেয়ের মুখে অ্যাসিড ছোঁড়া,বইলে রূপ বন্যা।

আবার মৃত্যু,গৃহ বিবাদ,মদ্যপ স্বামীর গুনে,
অসহ্য চাপে আত্মহত্যা,কেরোসিন আগুনে ।

আরো কতো বলি মৃত্যুর পথ,ধর্ষণ ,পণ প্রথা ,
নারীর ওপর বাহাদুরি ,ছল চাতুরী ,কু-কথা ।
এই নারীই সৃস্টি কারী,সমাজের ধারক বাহক,
নয়কো নারী সেবা দাসী, বা পুরুষ তুষ্ট গ্রাহক।

তবু আজ বলি,গর্বে ফুলি,নারীপুরুষ নেই ভেদ
মৃত্যু আনে করাল ছায়া,জীবনহান�¦
               ------------

৩.)
নির্ঘুম বর্ষার রাত
           নাসির ওয়াদেন

একটু ছুঁতে চেয়েছিলে বর্ষা বুকের উপত্যকা
মাঝে মাঝে ছোঁয়াছুঁয়ি
ছোঁয়াচে শোঁয়াপোকার রতিসম্ভোগে
বড্ড এক কদমচাল গড়িয়ে যায়

ভাঙা কুঁড়েঘরখানি একাকী দাঁড়িয়ে
বজ্রপাতেও ভয় নেই  কোনো
মূর্তি যুগলের, ছায়াযুদ্ধ উপভোগ করে

ঝিরঝির বৃষ্টির শব্দে কোলাহল
আবছা নড়াচড়া শীৎকার শব্দ
বিজলির আলো ধুয়ে মুছে দিচ্ছে

এবার পরস্পরের হিমোষ্ণ রক্ত মিলেমিশে
উদ্দামতা ভোগ করে নির্ঘুম বর্ষার রাত ।
            --------------

৪.)
_____রোড শো
                সুনন্দ মন্ডল

লতানে ডালপালা গাছের গা বেয়ে শ্বাস নিচ্ছে
মুহ্যমান কিছু চারিত্রিক বিলাপ গাঁথা।

নিষ্ঠুর দেহখানি কত প্রজন্ম ধরে
রোগের জিন বহন করে।
কত লোক এসে দেখে যায়
মাড়িয়ে চলে অনেকে পায়ের কাঁটায়।

রক্ত ঝরার হিসাব কে লেখে?
কেউ নেই ইতিহাসের গল্প লেখার!
সময়ের ব্যাসার্ধে হারিয়ে গেছে জ্যা-এর রূপরেখা।
তবু বাঁচার আশা, লুকিয়ে লুকিয়ে জানালার কাঁচে!

যখন জীবাশ্মের মতো আটকে থাকে প্রাণটা
রাস্তায় কত পথিকের ভিড়।
কেউ আসে গলায় ক্যামেরার ডগা নিয়ে,
কেউ জীববিজ্ঞানের প্রলেপে নতুন দাগ টানতে।

আমরা একাকী তবু বেঁচে থাকি
তোমরাই যজ্ঞমেলা বসাও!
             -------------
৫.)
এসো তুমি
     বিকাশ দাস

এসো
উসনো চালের গরম গলা ভাতে
এক ঘুম নিয়ে কাঁথায় শীতের রাতে ।
তুমি আমার লক্ষীশ্রী
তুমি আমার ভাগ্যশ্রী ।

এসো
গুছিয়ে  সকল অভাব তোমার  হাতে
সব সুখ টুকু নিংড়ে রোজ দুমুঠো ভাতে ।

এসো
মির্জা গালিবের শায়রী দুচোখ পেতে
বুকের পাঁজরে দুজনের সাথে হৃদয় মেতে ।

এসো
মেঘের বাজনায় বৃষ্টির জলতরঙ্গ পায়
কাঁচের চুড়ির ছটা ঠেকলে আমার গায় ।

এসো
বিকেল ভাঙ্গা সন্ধ্যা রাঙা ঘরের ছাদে
জড়িয়ে রাতভোর শরীর জাগা উন্মাদে ।

এসো
মাটির সোহাগ রাঙা কুসুম খোঁপায় ঢেকে
প্রণয় প্রহর সতর্কের দিন রাত আগলে রেখে ।

এসো
অমোঘ মেঘের বর্ষার তুলির বর্ণ বাণে
শাঁখা সিঁদুর সূর্য চাঁদ ভিটে মাটির টানে ।

এসো
সুখ দুঃখ লাগা চালে ডালের দোসরে
আমার কবিতায় শব্দের ঝাঁকা উজার করে ।

এসো
চাল মাপা অন্নর কৌটোর সংসারে
স্বর্গ রাখা ঘরের ভেতর দুহাতের সংস্কারে ।
তুমি আমার লক্ষীশ্রী
তুমি আমার ভাগ্যশ্রী ।

            ----------------

৬.)
অধুনা
  অমিতাভ দাস

আমাদের জীবন যাপন
পায়ে পায়ে মরন চাকা
সব কিছু পাওয়ার পরেও
বুকের এই ঘরটা ফাঁকা।

এগোতে আর এগোতে
ভুলেছি অতীত কথা
ভুলেছি যুদ্ধ খেলায়
সারি সারি লাশের মাথা।

ইতিহাস ছুটতে থাকে
অলি গলি রাস্তা ধরে
নদীদের রক্ত স্রোত ও
বয়ে চলে ভীষণ তোড়ে।

সময়ের শব্দ এখন
আধুনিক মানুষ খোঁজে
মানুষের মুখোশগুলো
স্বার্থের শব্দ বোঝে।

মানুষের মুখোশগুলো
স্বার্থের শব্দ বোঝে।
      ------------------
৭.)
শ্রদ্ধাস্পদেষু
  নাজিমা পারভীন


আমিত্ববোধ সর্বদায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে অক্ষম ,

অসৎ গতিবিধির পূর্বাভাষে যে পথে ইতি টানা,

সে পথটাতেও অহংবোধে ঝুলেছিল প্রবেশাধিকার বাজেয়াপ্ত শিকল,

তারপর দুই চান্দ্রমাসপ্রায়,

ইতি টানা পথের চার পাঁচটা কাঁকর হঠাৎ মসৃণ গন্তব্যে পথ কাটল,

অতীতের সেই সহকর্মারত কয়েকটি পরিচয়হীন সাক্ষাৎ আলাপচারিতায় হাত বাড়ালো আজ,

করুণার ছলে কাঁকরগুলোকে মসৃণ মানবিকতায় স্থান দান,

হয়তো তারাও স্বার্থচরিতার্থে অসৎ গতিবিধির ভুক্তভোগী ধূলিকণা !
            ------------------
৮.)
   অভিমান
_________ শরদিন্দু চক্রবর্তী

সকালের নরম তাপ শিশির ছুঁয়ে দিলেই..
ওরা টুক করে নরম রোদ্দুর হয়ে যায়।

আর,সারাদিন গোঁসা করে বসে থাকে শিশিরের সাথে সারারাত সহবাসে থাকা সবুজ দুব্বোঘাস।
সন্ধে হলেই রোদ্দুর মরে যায় শ্যাওলা-বিলে;
শিশির ফিরে আসে দুব্বোর বুকে,
কান্নায় ধুয়ে দেয় অভিমানী দুব্বোর বুক।

আবারো সকাল হয়, বেঁচে ওঠে রোদ্দুর।
একবুক আশা নিয়ে দুব্বো বসে থাকে কখন সন্ধে নামে।
         _______________


৯.)
কথার কথা
  ---------শুভ্রা

কিন্ত তুমি যে বলেছিলে সাথে নেবে ...
একসাথে কাঞ্চনজঙ্ঘার শীতলতা স্পর্শ নেবো।
কিছুটা ঝাউবীথি হাত ছুঁয়ে নির্জনে হাঁটবো
পাহাড়ী পথে ।
কিছু বুনো ফুল ওই খাদের ধারের ঝোপ থেকে
এনে দেবে তুলে ...
আমি ভয় পেয়ে কেঁপে উঠবো
তুমি খোঁপায় গুঁজে দিয়ে বলবে
দূর পাগলী ! !
সন্ধ্যেবেলা শীত নামবে বেশ
একসাথে কফির মগ ছোঁয়াবো ঠোঁটে হোটেলের
ব্যালকনিতে !
দূরে পাহাড়ের চূড়ায় বরফ হবে ফিকে ...
ধীরে ধীরে আঁধার নামবে পাহাড়ে আর
আমাদের মাঝে ...
শীতল আঁধারেতে হারিয়ে যাবো আমরা দুটিতে ...
এমনটাই তো কথা ছিলো যে ...
কিন্তু .......

দিদি পেলেন কিনা একবার জানাবেন । আমি কি আরো পাঠাতে পারি ? যদি অন্য গুলো পছন্দ হয় ..
              --------------
১০.)
জাতের পূজারী
           -- আমিরুল ইসলাম
 
  মুখে বলে জাত নায়,
 চেয়ে দেখো নিজের বেলায়!
 উপরে তারা জাতকে নিয়ে,
ভেতরে খোঁজে জাতের মেয়ে!

আজও পদবি জাতিকে চেনায়!
   হয়নি এখনও জাত বিদায়,
  জাতের বিরোধ মিছেয় মুখে,
    ভেতরে তাকে পুষে রাখে!

 বেজাত ছেলে ঘরে এলে,
   ঘৃণার বিষ ছড়ায় মনে।
  ধর্মই হলো জাতের মুলে,
 বাসা বাঁধে মনের কোণে।

প্রকাশ‍্যে জাতকে ফেলে ছুড়ে!
    মুখে ছড়ায় জাতের তত্ত্ব।
  গোপনে তাকেই পূজা করে!
    এটাই হলো চরম সত্য।।
    -------------------
১১.)
    শরিফ
         শুভদীপ পাপলু

উপোসে এনে দাও রোজা।
মিলে যাক ধর্মীয় অচ্ছুৎ।
দেখেছি,হেঁটে যেতে সোজা-
টিকিধারী মৌলবি দূত।

আমার এই দেহ,অবধি
ফেজটুপি,পৈতে নিখুঁত...
ওরা-আমরা সুবিধেবাদী।
রায়টে রাত ভারি;অদ্ভুত।

বলে দাও তুমি,কিভাবে--
জনগন কাড়বে মুকুট।
সন্ধ্যে'য়-'তুমি রবে নীরবে'
নমাজ বা আহ্নিক,অস্ফুট।

মানুষ'কে ফুল দিয়ে ঢাকি
এ'দিকের জিন,ও'দিকের ভূত...
চিতা বা কবর সেজে রাখি,
হে আল্লাহ, হে অবধূত!
     -----------------
১২.)
আমন্ত্রিততে জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি

এবং তোমাতে
   

এবং তোমাতে

      মেঠো গন্ধ

শরীর ছুঁয়ে খয়েরি বাদামি





স্নানরতা মেয়েটি


স্নানরতা মেয়েটি

       পুকুর ঘাটে

জল থইথই লুডোর ছকে…..







তুমি, রাস্তা হতে পারো


এইসব ইমারত দেখে বৈধতায়

পাখি হতে চেওনা


ভোর নামুক


কিছু মুহূর্ত চুম্বনে প্রতারিত হোক

কিছুটা বাক্সবন্দী কান্নারা

ঝালমুড়ি সোহাগে হাঁপিয়ে গেলে

              তুমি, রাস্তা হতে পারো




এখন সময় ব‍্যভিচারী


এখন সময় ব‍্যভিচারী

তুমি হেসো না

নখের আঁচড়ে নগ্ন হয়েছে নারী

আলো এসো না


নীল মেখে আজ নগ্ন কোনো নারী

চাঁদ হেসো না

এখন সময় ব‍্যভিচারী

তুমি এসো না
             --------------
১৩.)
আমার তুই
       কবি মিশ্র

তুই যে আমার সকাল বেলার রবি,
ঘুম জড়ানো চোখের তারার ছবি ।
স্বপ্নে ঘেরা মিষ্টি মধুর আকাশ,
শিশির ভেজা স্নিগ্ধ শীতল বাতাস ।

তুই যে আমার সন্ধ্যা বেলার তারা,
অলস ভরা দুপুর বেলার ঘুম ।
রাঙিয়ে দিয়ে মিষ্টি ঠোঁটের ছোঁয়া,
আলতো করে দিলি মিষ্টি চুম ।

তুই যে আমার গভীর রাতের উষ্ণতা,
অশ্রু ঝরা বালিশ ভেজা বৃষ্টিতে ।
উথলে ওঠা পাগল করা কান্না তুই,
আমার মনের সকল খুশির বন্যাতে ।
        ---------------------
১৪.)
নিজেকে খুঁজতে গিয়ে
 কলমে: কাঞ্চন বর্মন
  ********************

নিজেকে খুঁজতে খুঁজতেই একদিন  এক পশলা বৃষ্টি পেলাম।
দু একটি রঙ বেরঙের প্রজাপতির পিছু নিতে নিতে হঠাৎ দেখি,
অপুদের বাগানবাড়ির মাথায় আধখানা রঙধনু যেন আটকে আছে
তারপর ঘাটে এসে দেখি,
দুরন্ত ছেলেবেলাটা আধুনিকতার ছোঁয়ায় কখন ঝিমিয়ে গেছে...।

 একটা ইট পাথরের শহর ..
কয়েকটা কলেজফ্রেন্ড, হাসি ঠাট্টা মেশানো কিছু বিকেল,                  ভুল  ঠিক গুলোকে ঠিক পাত্তা না
দেওয়া মন খারাপগুলো যেন বড় বেমানান ...
তারপর, একটা ছক বাঁধা জীবন ..
যেখান থেকে নিজেকে খোঁজার শুরু
  ---------------------------
১৫.)
স্বাধীনতার পরাধীনতা
 কলমে: রীতা রায়।

ইংরেজরা তখন বশীভূত করতে পারেনি, যতদিন ইংরেজ আমল ছিল
স্বদেশীয়ানায় আন্দোলিত মন প্রাণ ..
দেশপ্রেমে উঠোন ছিল ভরা... কবিতায় ...গানে ...।

শতাব্দির সীমা ছাড়িয়ে, স্বাধীনতার আকাশ ক্রমে বিলীন পরদেশি রুচিতে ...সংস্কারে... ।
দাসত্বের মুকুট মাথায়, বইছে জয়ধ্বজা...
শিক্ষায় ভাষায় পরিধানে আক্রান্ত মনস্তত্ত্ব ;
আদব কায়দায় অভিযোজনে বিয়োগান্ত অস্তিত্ব।
আধুনিকতার মুখোশের আড়ালে পরাধীন ..শ্বাসরূদ্ধ সমাজব্যবস্থার
পরিকাঠামো।
          ----------------

১৬.)
জীবন-দহন
রূপা রবিদাস

মেঘ হতে চেয়েছিলাম আমি,
আকাশের শূন্য বুকে মাথা রেখে
নিশ্চিতে ঘুমোতে চেয়েছিলাম ।
মুঠো মুঠো নক্ষত্র ছড়িয়ে দিয়েছিলাম পরম যত্নে,
তখন ছায়াপথ বেয়ে নামছিল উৎসারিত আলোর ঝরণা ।
দিগন্তরেখা বলে কিছুই ছিল না আর,
নিমেষে বদলে গিয়েছিল পৃথিবী ।
কে বলেছে তোমায় চিঠিদের মৃত্যু হয়?
স্বয়ং, আমিই রাত জাগা অক্ষর গুলো নীলচে খামে পৌঁছে দিতাম ।
আবেগের রামধনু পথ হারাতো,
স্বপ্নের দরজায় বাস্তব উঁকি দিল একদিন ।
ধ্বস নামল আশ্রিতের চোরাস্রোতে,
এ গল্প কোনো সন্ধ্যায় ল্যাম্পপোষ্টের ধারে প্রেমের প্রচ্ছদ নয় ।
এ গল্পটা আমার একার, এক নির্জন রাতের,
এ গল্প নির্ঘুম রাতে জ্যোৎস্না-স্নাত হওয়ার ইতিহাস ।
            ---------------
১৭.)
>>>>ব্ল্যাকস্পট<<<
       বিশ্বজিৎ প্রামাণিক
সব আকাশের নীচে তারারা জাগে না,
ধূমকেতুরা কালো নিশান রেখে গেছে!
তবুও স্বপ্নের মৃত্যু নেই!
রাত্রির যন্ত্রণায় সভ্যতা খসে গেছে।

সব ল্যাম্পপোষ্টের নীচে বাতিরা নেভে না,
পাখিরা লাখো কলরব রেখে গেছে!
তবুও গল্পের মৃত্যু নেই!
আলোকের মূর্ছনায় গুচ্ছতা মুছে গেছে।

সব প্রশাখার নীচে টক্সিন থাকে না,
পাতারা বৃক্ষে অক্সিজেন রেখে গেছে!
তবুও আসবাবের মৃত্যু নেই!
বাতাসের স্নিগ্ধতায় রুক্ষ্মতা ঘুচে গেছে।

সব পাঁজরের নীচে স্ফুলিঙ্গ ওঠে না,
রক্তেরা বুকে হার্টবিট রেখে গেছে!
তবুও হৃদয়ের মৃত্যু নেই!
বিবেকের নিশানায় নাব্যতা শুষে গেছে।
            ----------------
১৮.)
  সম্পাপ্তিকরণ
     বনানী চক্রবর্ত্তী

তোমার ঠোঁটের
গাঢ় লালের পিছনে
লুকিয়ে ছিল যে বিষ,

আমার ঠোঁটে
মাখার পরে হঠাৎ
নীল সমস্ত শরীর,

চোখের সামনে
আবছা তোমার মুখ
খুশির হাসিতে বিভোর,

একি প্রতিশোধ
আমি ভালবেসেছি তোমায়
সেটাই আমার দোষ,

নিঝুম রাত্রি
ডিম লাইট একরত্তি
মেঝেতে পড়লো শরীর,

কাঁপছে শরীর
এ প্রেমের শিহরণ
নাকি প্রেমের সম্পাপ্তিকরণ।।

              -------------

১৯.)
বর্ষামঙ্গল
মৌসুমী ভৌমিক
***************
শ্রাবণধারার নিবিড়তায় যখন সবুজপাতারা
                     অনাবিল খুশিতে মগ্ন
কাঁচা সবুজের পেলবতায় গাছে গাছে তখন
      মেহগনি আভা ।

এই বর্ষামঙ্গল -  তেমনি সুঘ্রাণ
                 বনলতা সেনের এলোকেশে

জলদ অমৃতে প্রকৃতির কোলে এক অপরূপ সবুজতা
এই সবুজতা আকণ্ঠ পান করি।

নরম সবুজ সদ্য পাতাদের বৃষ্টিযাপন
        ঝিরঝির বর্ষাযাপন
   মুগ্ধতার পরশ ছড়িয়ে রাখে এবেলা।

  এভাবেই বর্ষাঞ্জলি লিখে যাক মঙ্গলাচরণ ।

                  ------------
২০.)
    শব্দ করো
           ডট.পেন

শব্দ করো, শব্দ করো পারলে তুমি আরেকটুটা
হাওয়ার গায়ে ভাসিয়ে দেব নৌকো কাগজ,
বৃষ্টি এলে উড়িয়ে দেব এপাশ ওপাশ বর্ষাতিটা
তোমার নামে সবটা রঙিন কথার অবাধ্য সাজ।

হালকা মতো অালোর আভা যে পথে যায়
ভাঙছে কথা নিরব কথায় অজস্র ভুল,
তোমার নামে বিন্দু আলোর নিয়নকে পায়
ভুলের মাপেই উড়িয়ে দিলে শ্যাওলা যে চুল।













No comments:

Post a Comment