[সেপ্টেম্বর সংখ্যা]
===================
সম্পাদকীয়,
প্রাথমিক ভাবে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ হলেও সময়ের দাবিতে আমরা এখন ব্লগেও। "কবিতার ছন্দে" গ্রুপের সদস্যদের একসঙ্গে 9-10টি কবিতা কবিপরিচয় সহ ব্লগে প্রকাশ করা চলছে। কবিদের পরিচিতি বাড়ানোর প্রয়াসে। আমাদের তরুণ ব্রিগেড মানস খাঁড়া ও সুদীপ্ত সেনকে এজন্য গ্রুপের পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ।
যদিও আগেও আমরা পেয়েছি, তবুও আজও পড়াশোনার সাথে সাথে নতুন ভাবনায় নতুন আঙ্গিকে তরুণদের কবিতা চর্চা কবিতাকে নতুন পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। সাহিত্যে এই তারুণ্য প্রভাব নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
==================
♦♦♦♦♦♦♦
সূচীর পাতা কবির নামে
♦♦♦♦♦♦♦
১.)
স্বাধীনতা
সমরেশ পর্বত
এ-দেশ আজ সফল
সকল দেশের সেরা,
দেশের তরে ভাবোনা আর
সুখের পাখি তোমরা।
দেশ ভক্তি নেই মনে
কেবল নিয়ম পালন,
সবার মাঝে তেরঙ্গা তোলো
সেজে ওঠো লালন।
সবই আজ লোক দেখানো
দেশের তরে আবেগ,
স্বার্থ ছাড়া কেউ চলো না
মারছো নিজের বিবেক।
ছুটি বলে আমেজ করো
জমাও হাটে ভিড়,
সকাল সকাল মাংস কেনো
তোমরাই মহাবীর।
মাংসের দোকান জুড়ে
আজকের বীর বিপ্লবী তোমরা,
দাঁড়িয়ে থেকে মুরগি মারো
শত্রুকে করো পৃথিবী ছাড়া ।
খাবার পাতে আমেজ করো
কেউ ভাবোনা ব্যথা,
দেশের কাজে দশের কাজে
শুধু বুঝো নিজের কথা।
সারাক্ষন যুদ্ধ করে
নিলে অনেক রক্ত,
যুদ্ধ শেষে স্বাধীন ভারত
তোমরাই দেশ ভক্ত।
=====≠=======
২.)
শ্রদ্ধাস্পদেষু
নাজিমা পারভীন
আমিত্ববোধ সর্বদায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে অক্ষম ,
অসৎ গতিবিধির পূর্বাভাষে যে পথে ইতি টানা,
সে পথটাতেও অহংবোধে ঝুলেছিল প্রবেশাধিকার বাজেয়াপ্ত শিকল,
তারপর দুই চান্দ্রমাসপ্রায়,
ইতি টানা পথের চার পাঁচটা কাঁকর হঠাৎ মসৃণ গন্তব্যে পথ কাটল,
অতীতের সেই সহকর্মারত কয়েকটি পরিচয়হীন সাক্ষাৎ আলাপচারিতায় হাত বাড়ালো আজ,
করুণার ছলে কাঁকরগুলোকে মসৃণ মানবিকতায় স্থান দান,
হয়তো তারাও স্বার্থচরিতার্থে অসৎ গতিবিধির ভুক্তভোগী ধূলিকণা !
====≠========
৩.)
অভিমান
_________© শরদিন্দু চক্রবর্তী
সকালের নরম তাপ শিশির ছুঁয়ে দিলেই..
ওরা টুক করে নরম রোদ্দুর হয়ে যায়।
আর,সারাদিন গোঁসা করে বসে থাকে শিশিরের সাথে সারারাত সহবাসে থাকা সবুজ দুব্বোঘাস।
সন্ধে হলেই রোদ্দুর মরে যায় শ্যাওলা-বিলে;
শিশির ফিরে আসে দুব্বোর বুকে,
কান্নায় ধুয়ে দেয় অভিমানী দুব্বোর বুক।
আবারো সকাল হয়, বেঁচে ওঠে রোদ্দুর।
একবুক আশা নিয়ে দুব্বো বসে থাকে কখন সন্ধে নামে।
===========
৪.)
নক্সীকাঁথা
কৌশিক দাস
___________________
ভুল বিছিয়ে ভুল বিছিয়ে
পড়ন্ত এই বেলা
এক-পা দু-পা পিছিয়ে পিছিয়ে
পথ হারিয়ে ফেলা।
পথ খুঁজতে পথ খুঁজতে
পথের প্রান্তে এসে
পুকুরগুলো দুপুরগুলো
ভ্রম নদীতে মেশে।
ভ্রম মিশিয়ে ভ্রম মিশিয়ে
ভ্রমের গরল সুধা
পান করে নেয় দিবানিশি
তৃষার্ত বসুধা।
সুধার তৃষ্ণা সুধার তৃষ্ণা
আকণ্ঠ বুক জ্বালা
স্বপ্নে আগল কেউ দিসনা
আকাঙ্খা সুখ ঢালা।
আকাঙ্খা সার আকাঙ্খা সার
সুস্বাদু সুচারু
ইচ্ছে যেন পাতা বাহার
ফুলের নিটোল কারু!
ফুল কুড়িয়ে ফুল কুড়িয়ে
অবাক মালাগাঁথা
মালাতো নয় মগ্নতা ময়
জীবন নক্সীকাঁথা!
[ঠিকানা-আমতা,হাওড়া।]
=======≠======
৫.)
ঔদ্ধত উদ্ধৃতি.....
কৃষ্ণ বর্মন
কবিতার প্রতিটি স্তবকই যদি স্তাবক হয়
তবে অসহায় ফুলের স্তবকগুলি তো
অকালে ঝরে যাবেই।
ফুলকে মিথ্যে আশ্বাস দেওয়ার প্রয়োজন নেই
সে নির্মম সত্যকে স্বীকার করতে জানে
অকালে কিংবা খুব সকালে।
কিন্তু যারা স্তাবকতার স্ততি কিংবা প্রশস্তি
ছাড়া কিছু জানে না
তারা আসলে প্রস্তরীভূত।
বিশ্বস্ত থাকার আপ্রাণ চেষ্টায়
আনুগত্যকে চিরন্তন সত্য মেনে
তারা আপন অস্তিত্বকেই ভুলে গিয়েছে।
স্তবকও তাই বিস্তৃতি ভুলেছে
সাথী হয়েছে বিস্মৃতি
নীরবে সম্মতি দিয়ে কবিতা
মেনেছে ঔদ্ধত উদ্ধৃতি।
======≠======
৬.)
মোমবাতির কথা
মাম্পি ঘোষ
গলন্ত মোমের নিভন্ত পাদদেশ।
মৃত্যুর ঘনঘটা আলগোছে সরিয়ে দূরে
জ্বালিয়ে দেয় জীবন
জীবন-মৃত্যু অমোঘ সত্য
অস্বীকারের স্পর্ধা মূর্খের অভিপ্রায়।
সঞ্চয়ের সাতরঙা ঝুলি থেকে একটি একটি
রং বিলোতে থাকে
ফুরিয়ে যাওয়ার আনন্দ গভীর প্রাপ্তি
সবাই ফুরিয়ে যেতে পারেনা।
অস্তিত্ব সঞ্চয়ের আশঙ্কায় অপচয় হয়
এক একটি প্রাণবায়ু
তবুও আগুন জ্বলে কই?!
শুধু মোমবাতিরাই পায় শিখার সমারোহে অংশীদারি।
=======≠======
৭.)
পথ প্রদর্শক
--------------- পাখি পাল
দ্রষ্টা তুমি, মিত্র তুমি
তুমিই উপদেষ্টা....
জীবন পথের ঠিক ভুলে
তুমিই নিয়ম নিষ্ঠা....
জীবন-যুদ্ধের রণ কৌশল
শেখাও তুমি নিত্য....
সূর্য রূপী জ্ঞানের আলোয়
বিকশিত করো সত্য....
স্নেহ মমতার বন্ধনে তুমি
বাঁধো সহস্র হৃদয়....
ভালোবাসার পরিমণ্ডলে
হয় নতুন প্রানের উদয়....
অন্তরের গভীর আঁধারে
যে দীপ দিতেছো জ্বালি....
সে আলোর দীপ্তি তে যেন
দূর হয় কলুষতার কালী....।।
ঠিকানা-(গ্রাম-মির্জাপুর,জেলা-হাওড়া,রাজ্য-পশ্চিমবঙ্গ,দেশ-ভারতবর্ষ )
======≠========
৮.)
অন্তঃদৃষ্টি
অমৃতা বিশ্বাস সরকার (বাঁকুড়া)
চল না রে চল যাই এগিয়ে ,
নেই তো কোনো মানা ।
সামনে আছে বিস্তৃত পথ ,
হোক্ না অচেনা ।
কেউ যদি না সঙ্গ দেয় ,
তবে চল্ এগিয়ে যাই একা একা ।
হোক্ না পথ সোজা -সরল ,
কিংবা আঁকা -বাঁকা ॥
ভয়টা কীসের ?-সাহস আছে ,
আছে মনেতে বিশ্বাস ।
এইখানেতেই বইছে বাতাস
নিত্যদিন বারোমাস ॥
হাজার ফোঁটা ধুয়ে দিয়ে যায় ,
হাজার রোদ ঝিলমিলায় -
আর জোনাকি দেখায় পথ ।
তবে একটু দূরেই ভাগ হয়েছে ,
যেমনটা ভাগ হয়ে যায় মত ॥
মনের কথা শুনবি সেখানে ,
চোখের কথা নয় ।
মনের চোখ না থাকলে যে
সম্মুখ দৃষ্টিতেও ভুল হয় ॥
=====≠=========
৯.)
বিদ্বেষী হাইকু
অ ম র জি ৎ ম ণ্ড ল
১
প্রকৃতি রোষে
মৃত্যুপুরীর ডাকে
কেরল ভাসে ।
২
ক্ষুধার্ত বুকে
ত্রাণের হাহাকার
কেরল দেখে ।
৩
শান্তির বাস
মৃত্যুর স্রোতোস্বিনী
করেছে গ্রাস।
======≠==========
১০.)
এ কেমন বর্ষাকাল
নৃপেন্দ্রনাথ মহন্ত
এ কেমন বর্ষাকাল!কেমন শ্রাবণ!
এক ফোঁটা জল নেই চোখে!
দিনমান প্রবল তপন
শুধু জ্বলে আর জ্বলে।
কবিরা দীর্ঘকাল অপেক্ষায় আছে।
বৃষ্টির নূপুরের শব্দগুলিকে গানে বেঁধে
তার কণ্ঠের সুরে হৃদয়ের তার বেঁধে নেবে।
চাষীর হাতের মুঠিতে হেসে উঠবে
সহজ সরল সবুজ শিশু ধানচারা।
আজ তো সবাই দিশেহারা।
কেমন রাজা হে তুমি নিয়মকানুন কিছুই মানো না?
আর কতকাল আসন্ধ্যাসকাল ঘুমিয়ে কাটাবে?
আর সকাল- সন্ধ্যা প্রজাদের ঘরবাড়ি
চোখ দিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাবে?
বলো,আর কতো দিন পরে
তোমার চুলের ঘ্রাণ, শরীরের গান
চাষীকে কবিকে মাতাবে?
**************************************
©রচয়িতা কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
রচনাকাল: হেমতাবাদ,১৯ আগস্ট, ২০১৮।
----------------------------------------------------------
কবি পরিচিতি : অবসরপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষক। পিতা: প্রয়াত মহেন্দ্রনাথ মহন্ত।
গ্রাম ও ডাকঘর: হেমতাবাদ।
জেলা: উত্তর দিনাজপুর।পিন-৭৩৩১৩০
=========≠==========
১১.)
_____ভাত
সুনন্দ মন্ডল
সারাদিন অনাহার
কর্মক্লান্তি, ঘর্মাক্ত দেহ
চোখের কোণে জ্বলন
মাথা টনটন রোদের বোঝা টেনে
থালা ভরা ভাত না হলেও চলে
নিরামিষ কিংবা আমিষের হিসাব চলেনা তত
যদি শেষ পাতে থাকে
স্ত্রীর ভালোবাসা
সন্তানের স্নেহ মাখা আদর
প্রাণে বাতাস জাগায়
শরীর মনে শীতলতা আনে।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার প্রদীপ
পুকুরে গা ডুবিয়ে আসতেই
তুলসী তলায় বাঁচার মৃদু আলো
কোনোদিন স্ত্রীর প্রেম প্রত্যাখ্যানে
চা-এর ধোঁয়ার সাথে উবে যায় ভালোবাসা
উঠোন জুড়ে নামে বিষণ্নতা
আর ক্রোধের পাহাড়
খিদে চড়া পেটে একটু ভাতের অভাবে
যেমন কপালের শিরা জেগে ওঠে।
-------------
কাঠিয়া,মুরারই, বীরভূম
জন্ম: ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৯
শিক্ষা: এম.এ(বাংলা), বি.এড
পেশা: বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা
নেশা: একটু আধটু কবিতা লেখা
খেয়াল বশে প্রকাশিত বই:
১)এবং আমি(নভেম্বর, ২০১৭)
২) প্রতিবন্ধকতা(ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)
===================
সম্পাদকীয়,
প্রাথমিক ভাবে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ হলেও সময়ের দাবিতে আমরা এখন ব্লগেও। "কবিতার ছন্দে" গ্রুপের সদস্যদের একসঙ্গে 9-10টি কবিতা কবিপরিচয় সহ ব্লগে প্রকাশ করা চলছে। কবিদের পরিচিতি বাড়ানোর প্রয়াসে। আমাদের তরুণ ব্রিগেড মানস খাঁড়া ও সুদীপ্ত সেনকে এজন্য গ্রুপের পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ।
যদিও আগেও আমরা পেয়েছি, তবুও আজও পড়াশোনার সাথে সাথে নতুন ভাবনায় নতুন আঙ্গিকে তরুণদের কবিতা চর্চা কবিতাকে নতুন পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। সাহিত্যে এই তারুণ্য প্রভাব নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
==================
♦♦♦♦♦♦♦
সূচীর পাতা কবির নামে
♦♦♦♦♦♦♦
১.)
স্বাধীনতা
সমরেশ পর্বত
এ-দেশ আজ সফল
সকল দেশের সেরা,
দেশের তরে ভাবোনা আর
সুখের পাখি তোমরা।
দেশ ভক্তি নেই মনে
কেবল নিয়ম পালন,
সবার মাঝে তেরঙ্গা তোলো
সেজে ওঠো লালন।
সবই আজ লোক দেখানো
দেশের তরে আবেগ,
স্বার্থ ছাড়া কেউ চলো না
মারছো নিজের বিবেক।
ছুটি বলে আমেজ করো
জমাও হাটে ভিড়,
সকাল সকাল মাংস কেনো
তোমরাই মহাবীর।
মাংসের দোকান জুড়ে
আজকের বীর বিপ্লবী তোমরা,
দাঁড়িয়ে থেকে মুরগি মারো
শত্রুকে করো পৃথিবী ছাড়া ।
খাবার পাতে আমেজ করো
কেউ ভাবোনা ব্যথা,
দেশের কাজে দশের কাজে
শুধু বুঝো নিজের কথা।
সারাক্ষন যুদ্ধ করে
নিলে অনেক রক্ত,
যুদ্ধ শেষে স্বাধীন ভারত
তোমরাই দেশ ভক্ত।
=====≠=======
২.)
শ্রদ্ধাস্পদেষু
নাজিমা পারভীন
আমিত্ববোধ সর্বদায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে অক্ষম ,
অসৎ গতিবিধির পূর্বাভাষে যে পথে ইতি টানা,
সে পথটাতেও অহংবোধে ঝুলেছিল প্রবেশাধিকার বাজেয়াপ্ত শিকল,
তারপর দুই চান্দ্রমাসপ্রায়,
ইতি টানা পথের চার পাঁচটা কাঁকর হঠাৎ মসৃণ গন্তব্যে পথ কাটল,
অতীতের সেই সহকর্মারত কয়েকটি পরিচয়হীন সাক্ষাৎ আলাপচারিতায় হাত বাড়ালো আজ,
করুণার ছলে কাঁকরগুলোকে মসৃণ মানবিকতায় স্থান দান,
হয়তো তারাও স্বার্থচরিতার্থে অসৎ গতিবিধির ভুক্তভোগী ধূলিকণা !
====≠========
৩.)
অভিমান
_________© শরদিন্দু চক্রবর্তী
সকালের নরম তাপ শিশির ছুঁয়ে দিলেই..
ওরা টুক করে নরম রোদ্দুর হয়ে যায়।
আর,সারাদিন গোঁসা করে বসে থাকে শিশিরের সাথে সারারাত সহবাসে থাকা সবুজ দুব্বোঘাস।
সন্ধে হলেই রোদ্দুর মরে যায় শ্যাওলা-বিলে;
শিশির ফিরে আসে দুব্বোর বুকে,
কান্নায় ধুয়ে দেয় অভিমানী দুব্বোর বুক।
আবারো সকাল হয়, বেঁচে ওঠে রোদ্দুর।
একবুক আশা নিয়ে দুব্বো বসে থাকে কখন সন্ধে নামে।
===========
৪.)
নক্সীকাঁথা
কৌশিক দাস
___________________
ভুল বিছিয়ে ভুল বিছিয়ে
পড়ন্ত এই বেলা
এক-পা দু-পা পিছিয়ে পিছিয়ে
পথ হারিয়ে ফেলা।
পথ খুঁজতে পথ খুঁজতে
পথের প্রান্তে এসে
পুকুরগুলো দুপুরগুলো
ভ্রম নদীতে মেশে।
ভ্রম মিশিয়ে ভ্রম মিশিয়ে
ভ্রমের গরল সুধা
পান করে নেয় দিবানিশি
তৃষার্ত বসুধা।
সুধার তৃষ্ণা সুধার তৃষ্ণা
আকণ্ঠ বুক জ্বালা
স্বপ্নে আগল কেউ দিসনা
আকাঙ্খা সুখ ঢালা।
আকাঙ্খা সার আকাঙ্খা সার
সুস্বাদু সুচারু
ইচ্ছে যেন পাতা বাহার
ফুলের নিটোল কারু!
ফুল কুড়িয়ে ফুল কুড়িয়ে
অবাক মালাগাঁথা
মালাতো নয় মগ্নতা ময়
জীবন নক্সীকাঁথা!
[ঠিকানা-আমতা,হাওড়া।]
=======≠======
৫.)
ঔদ্ধত উদ্ধৃতি.....
কৃষ্ণ বর্মন
কবিতার প্রতিটি স্তবকই যদি স্তাবক হয়
তবে অসহায় ফুলের স্তবকগুলি তো
অকালে ঝরে যাবেই।
ফুলকে মিথ্যে আশ্বাস দেওয়ার প্রয়োজন নেই
সে নির্মম সত্যকে স্বীকার করতে জানে
অকালে কিংবা খুব সকালে।
কিন্তু যারা স্তাবকতার স্ততি কিংবা প্রশস্তি
ছাড়া কিছু জানে না
তারা আসলে প্রস্তরীভূত।
বিশ্বস্ত থাকার আপ্রাণ চেষ্টায়
আনুগত্যকে চিরন্তন সত্য মেনে
তারা আপন অস্তিত্বকেই ভুলে গিয়েছে।
স্তবকও তাই বিস্তৃতি ভুলেছে
সাথী হয়েছে বিস্মৃতি
নীরবে সম্মতি দিয়ে কবিতা
মেনেছে ঔদ্ধত উদ্ধৃতি।
======≠======
৬.)
মোমবাতির কথা
মাম্পি ঘোষ
গলন্ত মোমের নিভন্ত পাদদেশ।
মৃত্যুর ঘনঘটা আলগোছে সরিয়ে দূরে
জ্বালিয়ে দেয় জীবন
জীবন-মৃত্যু অমোঘ সত্য
অস্বীকারের স্পর্ধা মূর্খের অভিপ্রায়।
সঞ্চয়ের সাতরঙা ঝুলি থেকে একটি একটি
রং বিলোতে থাকে
ফুরিয়ে যাওয়ার আনন্দ গভীর প্রাপ্তি
সবাই ফুরিয়ে যেতে পারেনা।
অস্তিত্ব সঞ্চয়ের আশঙ্কায় অপচয় হয়
এক একটি প্রাণবায়ু
তবুও আগুন জ্বলে কই?!
শুধু মোমবাতিরাই পায় শিখার সমারোহে অংশীদারি।
=======≠======
৭.)
পথ প্রদর্শক
--------------- পাখি পাল
দ্রষ্টা তুমি, মিত্র তুমি
তুমিই উপদেষ্টা....
জীবন পথের ঠিক ভুলে
তুমিই নিয়ম নিষ্ঠা....
জীবন-যুদ্ধের রণ কৌশল
শেখাও তুমি নিত্য....
সূর্য রূপী জ্ঞানের আলোয়
বিকশিত করো সত্য....
স্নেহ মমতার বন্ধনে তুমি
বাঁধো সহস্র হৃদয়....
ভালোবাসার পরিমণ্ডলে
হয় নতুন প্রানের উদয়....
অন্তরের গভীর আঁধারে
যে দীপ দিতেছো জ্বালি....
সে আলোর দীপ্তি তে যেন
দূর হয় কলুষতার কালী....।।
ঠিকানা-(গ্রাম-মির্জাপুর,জেলা-হাওড়া,রাজ্য-পশ্চিমবঙ্গ,দেশ-ভারতবর্ষ )
======≠========
৮.)
অন্তঃদৃষ্টি
অমৃতা বিশ্বাস সরকার (বাঁকুড়া)
চল না রে চল যাই এগিয়ে ,
নেই তো কোনো মানা ।
সামনে আছে বিস্তৃত পথ ,
হোক্ না অচেনা ।
কেউ যদি না সঙ্গ দেয় ,
তবে চল্ এগিয়ে যাই একা একা ।
হোক্ না পথ সোজা -সরল ,
কিংবা আঁকা -বাঁকা ॥
ভয়টা কীসের ?-সাহস আছে ,
আছে মনেতে বিশ্বাস ।
এইখানেতেই বইছে বাতাস
নিত্যদিন বারোমাস ॥
হাজার ফোঁটা ধুয়ে দিয়ে যায় ,
হাজার রোদ ঝিলমিলায় -
আর জোনাকি দেখায় পথ ।
তবে একটু দূরেই ভাগ হয়েছে ,
যেমনটা ভাগ হয়ে যায় মত ॥
মনের কথা শুনবি সেখানে ,
চোখের কথা নয় ।
মনের চোখ না থাকলে যে
সম্মুখ দৃষ্টিতেও ভুল হয় ॥
=====≠=========
৯.)
বিদ্বেষী হাইকু
অ ম র জি ৎ ম ণ্ড ল
১
প্রকৃতি রোষে
মৃত্যুপুরীর ডাকে
কেরল ভাসে ।
২
ক্ষুধার্ত বুকে
ত্রাণের হাহাকার
কেরল দেখে ।
৩
শান্তির বাস
মৃত্যুর স্রোতোস্বিনী
করেছে গ্রাস।
======≠==========
১০.)
এ কেমন বর্ষাকাল
নৃপেন্দ্রনাথ মহন্ত
এ কেমন বর্ষাকাল!কেমন শ্রাবণ!
এক ফোঁটা জল নেই চোখে!
দিনমান প্রবল তপন
শুধু জ্বলে আর জ্বলে।
কবিরা দীর্ঘকাল অপেক্ষায় আছে।
বৃষ্টির নূপুরের শব্দগুলিকে গানে বেঁধে
তার কণ্ঠের সুরে হৃদয়ের তার বেঁধে নেবে।
চাষীর হাতের মুঠিতে হেসে উঠবে
সহজ সরল সবুজ শিশু ধানচারা।
আজ তো সবাই দিশেহারা।
কেমন রাজা হে তুমি নিয়মকানুন কিছুই মানো না?
আর কতকাল আসন্ধ্যাসকাল ঘুমিয়ে কাটাবে?
আর সকাল- সন্ধ্যা প্রজাদের ঘরবাড়ি
চোখ দিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাবে?
বলো,আর কতো দিন পরে
তোমার চুলের ঘ্রাণ, শরীরের গান
চাষীকে কবিকে মাতাবে?
**************************************
©রচয়িতা কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
রচনাকাল: হেমতাবাদ,১৯ আগস্ট, ২০১৮।
----------------------------------------------------------
কবি পরিচিতি : অবসরপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষক। পিতা: প্রয়াত মহেন্দ্রনাথ মহন্ত।
গ্রাম ও ডাকঘর: হেমতাবাদ।
জেলা: উত্তর দিনাজপুর।পিন-৭৩৩১৩০
=========≠==========
১১.)
_____ভাত
সুনন্দ মন্ডল
সারাদিন অনাহার
কর্মক্লান্তি, ঘর্মাক্ত দেহ
চোখের কোণে জ্বলন
মাথা টনটন রোদের বোঝা টেনে
থালা ভরা ভাত না হলেও চলে
নিরামিষ কিংবা আমিষের হিসাব চলেনা তত
যদি শেষ পাতে থাকে
স্ত্রীর ভালোবাসা
সন্তানের স্নেহ মাখা আদর
প্রাণে বাতাস জাগায়
শরীর মনে শীতলতা আনে।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার প্রদীপ
পুকুরে গা ডুবিয়ে আসতেই
তুলসী তলায় বাঁচার মৃদু আলো
কোনোদিন স্ত্রীর প্রেম প্রত্যাখ্যানে
চা-এর ধোঁয়ার সাথে উবে যায় ভালোবাসা
উঠোন জুড়ে নামে বিষণ্নতা
আর ক্রোধের পাহাড়
খিদে চড়া পেটে একটু ভাতের অভাবে
যেমন কপালের শিরা জেগে ওঠে।
-------------
কাঠিয়া,মুরারই, বীরভূম
জন্ম: ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৯
শিক্ষা: এম.এ(বাংলা), বি.এড
পেশা: বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা
নেশা: একটু আধটু কবিতা লেখা
খেয়াল বশে প্রকাশিত বই:
১)এবং আমি(নভেম্বর, ২০১৭)
২) প্রতিবন্ধকতা(ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)
ধন্যবাদ
ReplyDeleteকবিতার ছন্দে